
নীরা …
রাত দুটো বেজে বিশের কাটা ছুঁই ছুঁই! নীরার চোখে ঘুম নেই তাই বিছানা ছেড়ে জানালার কাছে এসে দাড়িয়ে পড়ে, তার মনের মধ্যে কত সহস্র প্রশ্ন, জিজ্ঞাসা …
নীরা ভাবে এই ঘটনা না ঘটলে হয়ত সে নিজেকে এভাবে খুঁজে পেতো না কখনোই।
ঘটনাটার শুরু টিলক এর হঠাৎ বদলে যাওয়াতে। এই তো ক’দিন আগেও বেশ ভালো গুছিয়ে চলছিলো দু’জনের পথচলা। একসাথে ভার্সিটি শেষে কি করবে তারা? কিন্তুু হঠাৎ এক অজানা ঝরের থাবায় কি থেকে কি হয়ে গেলো!?
কিছুতেই কিছু মিলাতে পারছে না নীরা। এভাবে গল্পের শেষ হোক সে চাইনি। কিন্তুু টিলক সব কিছু এলেমেলো করে দিয়ে নীরাকে এ কোথায় যেন দাঁড় করিয়েছে ..
টিলক কিভাবে পারল এত জগন্য কাজ করতে? কিভাবে পারল নীরার ভরসাকে ভেঙে অন্য কারোর সাথে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে শরীরের ঘামের বিন্দু ঝরিয়ে শরীরের সুখ মেটাতে? অথচ নীরার আর টিলকের মাঝে এমন কিছুই হয়নি যার জন্য টিলক এমন করতে পারে।
নীরা ভাবে হয়ত এই শরীরকে মাড়িয়ে যে কামনার জন্ম হয়, যে কামনা পোড়াঁয় একটু ঘামের গন্ধে আটসেটে হয়ে দুটো আত্মাকে এতটুকুনের জন্য অন্যকোথাও টেনে নেয়, সে কামনার কাছে দীর্ঘ সময়ের ভরসা, ভালোবাসার প্রতিজ্ঞাগুলোকে খুব সহজেই যেনো মৃত্যু দিতে পারে। তিলে তিলে মেরে ফেলতে পারে জীবনের সাতটা বছর! সাতটা বছরের কাটানো সময়গুলোকেও।
নীরার মনে পরে স্কুল ও কলেজের শেষ দিনগুলো।
কতই সুন্দর স্মৃতিতে ভরা প্রতিটা দিন, প্রতিটা সময়।
নীরা ফ্ল্যাটে থাকে তার সাথে একই ফ্ল্যাটে আর তিনজন মেয়ে থাকে। তবে নীরা আজ বাসায় একা।বাকিরা যে যার মত ছুটিতে আছে।
আসলে নীরা কখনো নিজের কষ্টগুলোকে অন্যকে দেখাতে পারে না,বলতে পারে না কারণ সে জানে সব কথা সবার কাছে বলা যায় না। সবকিছুর একটা সীমা থাকে।কেবল নিজের একান্তের। নীরা ভীষণ কষ্ট পেয়েও স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছে কিন্তুুু ভেতরটায় ভেঙে টুকরো, টুকরো হয়ে রক্ত বন্যায় ভেসে যাচ্ছে তার হৃদয়। নীরা জানে টিলক সে মেয়েটাকে কখনো বিয়েও করবে না আর সে মেয়েটিও অন্য কারোর জীবনে জড়িয়ে আছে। তাহলে কেনো এই বাঁধ ভাঙা কামনার কাছে তারা নিজেদেরকে তৃপ্ত করে নীরাকে মরার জন্য বাধ্য করছে..!
নীরা ভাবছে এখনি নিজেকে শেষ করে দিবে। নীরার চোখ যখন সিলিং এর ওপর নিজেকে হারানোর খোঁজে উন্মুখ চাহনিতে তাকিয়ে তখন গাল বেয়ে অজস্র নোনা জল ফ্লোর গড়াচ্ছে। নাহ্ সে আর পারছে না। এবার নীরা ব্যাগ থেকে শাড়ি বের করে সিলিং এ ঝুলে পড়ার প্রস্তুতি নিতে থাকে আর ভাবে সে তো কখনো কাউকে ঠকায়নি, সবসময় খেয়াল রেখেছে সকলের তবে কেনো তাকে এমন দিন দেখতে হল?
নীরার সকল প্রস্তুতি শেষ। এখন…..
নীরা আস্তে আস্তে গলায় পড়ে নেয় গোলাবৃত্তটি, আর চোখ বন্ধ করে শেষবারের মত নিজের কাছে ও সৃষ্টি কর্তার কাছে ক্ষমা চেয়ে মুক্তির উদ্দেশ্যে নিজেকে পরিণতির কাছে তুলে দেয়…..
পরবর্তী…..to be continued…
Writer : Ms Eshee Chakma, BSC in Civil Engineering, European University of Bangladesh.
One thought on ““নিজের কাছেই ফেরা” 1st part of 2 (short story) by Eshee Chakma”