ভূমিকা: বন হল গাছের শহর,যেখানে নানা বৃক্ষ, লতা-পাতা, জীবজগৎ নিয়ে বনের শহর সৃষ্টি। পৃথিবীর প্রতিটি বনে রয়েছে নিজস্ব স্বকীয়তা ও বৈচিত্র্যময়টা। এক একটি বনে রয়েছে এক একটি শব্দ, রয়েছে স্বতন্ত্র গম্ভীর নির্জন অন্তরলোক,আছে আলাদা গন্ধ। সেজন্য, আপনি যখন কোন এক বনে প্রবেশ করবেন ঠিক তখন নিজস্ব একটি শব্দ শুনতে পাবেন,যেটা আগে আপনি হয়তো শোনেননি। ঠিক তেমনি এক বনের ভিতর তোমাদের ধীরে ধীরে নিয়ে যাচ্ছি, পাহাড়ের গভীরতা ও এর ভয়ংকর সুন্দর দূর্গমটা জানার জন্য।

ভোর হলো :
ঘুম এমন হয়েছে যে কখন ৮ ঘন্টা ঘুমিয়েছি তা বুঝতেই পারলাম না। সকাল না হতেই পাখির ডাকে ও ঝর্ণার আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে গেল। তখন ঘড়ির কাটা মোটে ৫ টা বাজে, সবাই
ভোরের আলো না ফুটতেই ঘুম থেকে উঠে সাথে একটি দা নিয়ে আবার পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে লাগলাম। এবার উদ্দেশ্য হলো সূর্য়দয় দেখা করা ও সাথে ছেলেটির পারিবারিক জুম দেখা। শুনেছি সেখান থেকে নাকি কয়েকটি উপজেলা এক নজরে দেখতে পাওয়া যায়। বলতে বলতে সূর্য়দেব আসার সময় হল, ফুলসুমরি গাছটির পাতা গুলো তখন বাতাসের সাথে নাচছে। আর সেখান থেকে পূর্বের যে উপজেলাটি দেখা যায় তখনও সেটি সাদা মেঘে ডাকা ছিল। দক্ষিণ দিকটি অন্য একটি পাহাড় দেখা যায় যেটি ঘন জঙ্গলে ভরা আর উত্তরের দিকে একটি বড় পাহাড়ে গ্রাম দেখা যাচ্ছে, সেখানেও জুম চাষ করেছেন পাহাড়িরা। পশ্চিমের দিকটি থেকে কাপ্তাই লেক পরিষ্কার করে দেখা যায়, কি অপূর্ব সৃষ্টি!
আমাদের গন্তব্য কোথায়:
এটি দ্বিতীয় দিন, সকালের রোদ গায়ে পড়া শুরু হল, সকালের ভাত খাওয়ার পর ছেলেটির বাড়ি থেকে বিদায় নিলাম। সাথে বিশাল আমের বস্তা সাজাং এর কাঁধে দেওয়া হল। ছেলেটির অন্য কাজ থাকার কারণে সে আমাদের কিছুদূর এগিয়ে দিয়ে বাড়ির দিকে চলে গেল। যেতে যেতে দেখা হল সুমন দাদার ভাইয়ের সাথে, বিশাল আম ও নানা ফলজ বাগান করেছেন তার বাড়ির আশেপাশে। পরিচয় হওয়ার পর সে কোন মতে আমাদের যেতে দিচ্ছেন না।তাই, দুপুরবেলার খাবারটা তাদের বাড়িতেই হল, দাদার আবদার ও আপ্যায়ন বনর্না করার মত না। বিশাল আম বাগান পরির্চয়া ও পরিবহনে বেশ অসুবিধা হয় বলে জানালেন। কিছুদূর এগিয়ে দিয়ে দাদাও আমাদের থেকে বিদায় নিলেন, বিশাল বিশাল গাছ ও বাঁশ বাগান ভেদ করতে করতে পরেরে গন্তব্য দিকে এগিয়ে গেলাম।
সত্য কথা বলি আমাদের কোন ঠিক ঠিকানা নেই কোথায় যাব। কোথায় থাকব, ঘন বন ফেরিয়ে একটি গ্রামে ডুকে পড়লাম। মূলত এ পাহাড়টি এ রেন্জের যত পাহাড় রয়েছে এটি সবচেয়ে বড় এবং এখনও ঘন বনে ঘেরা। তখন ঘড়ির কাটা বিকাল চারটা বাঝে, আমাদের কেউ কেউ দেখে পালিয়ে গেল, আর কেউ কথা বলার জন্য সামনে চলে এল।
একটি দোকানে চূড়ায় গিয়ে রুপান্তর দেওয়ান তার পরিচয় দিলে সৌভাগ্যক্রমে তাকে গ্রামের কার্বারীটি চিনতে পারেন। গ্রামটি আমার দেখা সেরা দশটি পাহাড়ি গ্রামের মধ্য একটি, কারণ এখানে সবকিছু রয়েছে। বাঁশের তৈরী পাহাড়ি ঘর, একপাশে বিশাল বন ও অন্যপাশে জুম করেছেন পাহাড়িরা। বনের ঠিক ভিতরে একটি জীর্ণ কুঠির রয়েছে, রয়েছে নিভীর বাঁশ বাগান ও বিভিন্ন জাতের বৃক্ষের ভরপুর। বিশাল একটি “চামিনি হাত্তোল” গাছে কাঁঠাল ধরেছে, বানর গুলো এক ডাল থেকে অন্য ডালে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে ও কাঠালের স্বাদ নিচ্ছে। পাহাড়ের ঠিক উঁচু স্থানে একটি বট মধ্য বয়সি বৃক্ষ রয়েছে, সেখান থেকে পুরো ৩৬০ ডিগ্রি চারদিকের দৃশ্য দেখা যায়। ঠিক সেখানেই একটি দোকান রয়েছে আর সে দোকানে বৃদ্ধ শিশু ও মেয়েরা জড়ো হয়ে খরব দেখছে।

পাহাড়ি গ্রামে রাত যাপন : চারটা বেজে তিরিশ হলো, রুপান্তর গ্রামের কার্বারীর সাথে কথা বলে তাদের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করলেন। একটু পরে সাজাং এলাকার যুবকদের সাথে বন রক্ষা কিভাবে করেন তা জানতে কথা বলা শুরু করল, আর রুপান্তর বাচ্চাদের ফুটবল নিয়ে সবচেয়ে উঁচু জায়গায় গেল। অতঃপর, আমি সাজাং এর সাথে সুর মিলিয়ে বাকি সব জানতে চেষ্টা করলাম এবং টুকটাক ভিডিও রেকর্ড করলাম। চিন্তার কথা হলো
পুরো গ্রামটি এতই দূর্গম যে এখানে শিশুরা প্রাইমারী শিক্ষার আওত্তায় পর্যন্ত্য নেই। পুরো আশে পাশের কয়েকটি গ্রামেও কোন স্কুল নেই,জানিনা তাদের ভাগ্যে কি লেখা রয়েছে!
গল্প আর চা খাওয়ার শেষের পর গ্রামের অন্য কোনায় গেলাম, একটি বাড়ির পিছনে মস্ত বড় ফুলসুমরি গাছ দেখে রুপান্তর আবার আটকে গেল। গ্রামের সে জায়গা থেকে পাবর্ত্য চট্রগ্রামের সবচেয়ে বৃহৎ পাহাড়টি দেখা যায়! নিজের সাথে নেওয়া পাবলো কাহলের বইটি নিয়ে এক জুমের কোনায় বসে পড়লাম, পাহাড়ি এ জুমের জায়গা থেকে পুরো এলাকটি পরিষ্কার দেখা যায়। এভাবেই সন্ধ্যার মধু বিকালটি বিশুদ্ধ বাতাসে কাঠিয়ে দিলাম।
সন্ধ্যা হতেই কার্বারী বাড়িতে গেলাম, সাথে দশটি দিম কিনে নিয়ে গেলাম কিন্তু কার্বারী কাকি তার স্বামীকে বলে ঘর থেকে আস্ত মুরগী জবাই করে দিলেন। ওহ বলা হয়নি; এ গ্রামের কার্বারীটি মূলত নারী কার্বারী! পাহাড়ে খুব কমই নারী কার্বারী রয়েছে তারমধ্য তিনি একজন। তাকে দেখলেই বুঝা যায় যে জীবনের বেশ কিছু পার করে এসেছেন। সবাই তার মাচাং ঘরে বসে পড়লাম, কাকি মদের বোটল দিয়ে বললেন ঘরেও বসতে পারবেন। কিন্তু মাচাং ঘরটি এতই সুন্দর যে সেখানে সন্ধ্যাটা বেশ সুন্দর যাচ্ছে, সাজাং এর “অলে মরে আরও দিগিবি” গানটি গুনগুন করছে আর রুপান্তর মদের বোটল দিয়ে ম্যাজিক দেখাচ্ছেন ; আমি স্লিপিং ব্যাগ খুলে বিছানা করে নিলাম। তখনও খাওয়া হয়নি,কার্বারী কাকি রাতের ভাত দিলেন এবং তার জীবনের কথা বললেন। খাওয়ার পর আমরা মাচাং এ পূর্নিমার আলোই আগামীকালের যাত্রা নিয়ে কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে গেলাম।

গ্রামের পাহাড় বেয়ে ভ্যালির দিকে যাত্রা : ভোর পাঁচটা বাঝে ঘুম ভাঙল, মেঘের চাদরে মোড়ানো পাহাড়টিতে তখনও পাখি গুলো ঘুম থেকে জাগেনি। মাচাং ঘর থেকে সামনের ভ্যালীটির অপার সৌন্দর্য মনে রাখার মত, আমি সবার আগে ঘুম থেকে উঠে গ্রামটি অন্য প্রান্তে দিকে গেলাম। দুজন বৃদ্ধ জুমিয়া “কলার চরা” কাঁধে নিয়ে আমার সামনে এসে রাখল। আমি বললাম জেতু এগুলো কি বাজারের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন? বলল হ্যাঁ। বললাম এখান থেকে কত সময় লাগে বাজারে পৌঁছাতে, বলল দু ঘন্টা। এরপর কিছু না বলে আমি সামনে এগিয়ে গেলাম।গ্রামের এখান থেকে পুরো পূর্ব দিকের ভ্যালীটি দেখা যায়, যে জাগায় দাড়িয়ে আছি, সেটি মূলত দুই উপজেলা শেষ সীমানা, আমরা পশ্বিম দিক থেকে এসেছি মূলত আর যাচ্ছি পূর্বের বিস্তৃত জনপদ গুলোর দিকে। একটু পর রুপান্তর ও সাজাং এসে বলল দাদা ওই পথ দিয়ে ভ্যালীটি নামব এবং সেখান থেকে নদী বেয়ে আরো একটি ভ্যালিতে পৌছাব, সেখানে পৌছাঁতে হয়তো দুপুর ২ টা লাগবে!
অতঃপর কার্বারী সাহেব সকালের খাবার পরিবেশন করলেন, খাবারের পর সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এগিয়ে গেলাম। পাহাড়ের গাঁ বেয়ে নামতে নামতে অনেক জুম ও বাশের পাহাড়ি বাড়ি ফেলে গেলাম। জুমের এক পাশে দুটি বিশাল বিশাল গাছ দেখতে পেলাম,কি অদ্ভুত গাছ রে বাবা! তানা এক ঘন্টা পাহাড় নামার পর ভ্যালীর পাশে এক জুমিয়ার বাড়িতে বিশ্রাম নিলাম। এ জুমিয়া বাড়িটিতে তিনটি শিশু রয়েছে-বড়টি মেয়ে সে ভ্যালীর একটি প্রাইমারী যায়,কিন্তু একটু দূরে হওয়ার কারনে যেতে কষ্ট হয়। শিশুদের সাথে গল্প করার পর আবার হাটতে লাগলাম ভ্যালির দিকে। ছড়ার চচচচ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে রুপান্তর কোন পথে যে নিয়ে যাচ্ছে সে বেশি চিন্তার ছিল, তবে ভ্যালিতে পৌঁছার পর সে শঙ্কা দূর হল। একটি দোকানে পৌঁছালাম,সেখানে দুটি বাড়ি ছিল এবং সাথে একটি ভাঙ্গা ইউনিসেফের স্কুল। দুটি পাহাড়ি শিশু ভিতরে পড়ালেখা করছেন, দোকানের পাশে বয়ে গেছে পরিষ্কার নদী। দোকানদার চা বানিয়ে দিল এবং জিগ্যেস করলে কোন দিকে যাচ্ছো এবং কোথায় থেকে এসেছ? সব উত্তর দিয়ে বললেন ওহ ঠিক আছে।

পাহাড়ি আরো একটি ভ্যালিতে পৌছালাম ঃ ওহ বলতে ভুলে গেছি যবে থেকে পাহাড়টি নেমেছি তখন থেকে আগের উপজেলাটি ফেলে অন্য এক উপজেলায় প্রবেশ করেছি। যাহোক দোকান থেকে যা কিছু দরকার কিনে নিলাম,কেননা গত দু দিনে অনেক খাবার শেষ হয়েছে। সেজন্য বাড়তি যা পাওয়া যায় কিনে নিলাম এবং তাদের বিদায় দিয়ে এগিয়ে গেলাম। উপত্যকার এ অংশটি বেশ বন্য, দলগুলো এলাকাটি সংরক্ষণ করার কারনে এখানে গাছ ও ছড়ার ধারা দেখতে পাওয়া যায়। মাথার উপর দিয়ে চিল আকাশে চক্কর দিচ্ছে, সেটি ছবি তুলতে রুপান্তর মরিয়া চেষ্টা করছে আর এদিকে সাজাং ছড়ায় না নামার আগেই ধপাস করে পড়ে গেল; আমিতো হাসতে হাসতেই ক্লান্ত হয়ে গেলাম। ছড়ার পাশেই বন এবং সেই পাশেই পাহাড়ি মাচাং ঘর গুলো দেখতে ছবির মত সুন্দর। বন থেকে পাখি উড়ে আসছে, ছড়ার কেউ মাছ ধরছে, কেউ পানি নিয়ে যাচ্ছে আর কেউ বা গরু দিয়ে হাল চাষ করছে। পাহাড়ি জনপদগুলো মুগ্ধ করার মত সুন্দর, পাহাড়ের এ অপার্থিব সৌন্দর্যের কাছে শহরের এসির চার দেওয়াল কিছুই নয়। ছড়ায় গোসল ছেড়ে নিয়ে আবার এগিয়ে গেলাম, এবার পাহাড়ি “গোনার” পথ ধরে সামনে এগিয়ে গেলাম, বিশ মিনিট পর পর একটি বাড়ি দেখতে পাওয়া যায়।
দুপুর দুটো বাঝে বিশাল এক খোলা মাঠে পৌঁছালাম, চারদিকে গ্রাম রয়েছে সাথে একটি গ্রাম্য বাজারও রয়েছে এখানে। বাজারে আমাদের দেখার জন্য বাচ্চারা জড়ো হয়েছে,মূলত এমন করে আগে কেউ আসেনি এ উপত্যকায়। তাই,অচেনা কোন শহরের এলাকার মানুষ দেখলেই বাচ্চারা জড়ো হয়। আমার বা সাজাং এ এলাকায় আগে আসা হয়নি, তবে রুপান্তর একবার এসেছিল এখানে। কিন্তু, সে অন্য রাস্তা দিয়ে এসেছিল,সেহেতু তার পথ জানার কথা নয়;
তবে এ ভ্যালীতে তার জানা শোনা কয়েকজন রয়েছে।
পাহাড়ি গ্রামটিতে গ্রামবাসী আমাদের জেরা করল:
ভ্যালীর গ্রামটিতে এক বন্ধুর বাড়িতে দুপুরের খাওয়া হলো, ভাত খাওয়ার পর আবার ছড়া বেয়ে সামনে এগিয়ে গেলাম। ওও বলতে ভুলে গেছি, গ্রামটি চাকমা জনগোষ্ঠীর গ্রাম হলেও এখানে বাজারের পাশে চার পরিবার কুকি জনগোষ্ঠী রয়েছেন। আমাদের সে নতুন বন্ধু কিছুদূর এগিয়ে চলে গেল, বিকাল হয়েছে কয়েক ঘন্টা পরে সন্ধ্যা নেমে আসবে তাই দেখানো পথে হাতটে লাগলাম। কিছুদূর সামনে গিয়ে ছড়ার পাশেই দেখলাম নারী ও শিশুরা গোসল করছে ছড়ার গভীর অংশে,আরো কিছুদূর এগিয়ে তিনজন কিশোরের সাথে দেখা হল।তাদের সাথে পরিচয় হয়ে জানতে পারি তারা সেই দূর পাহাড়ি গ্রামে যাবে।এটা শুনে আমি খুশি হয়ে গেলাম, বললাম আপনারা কেন যাবেন? তারা বলল ফ্রি ফায়ার গেম খেলতে সেখানে যান তারা আর সারা রাত সেখানে থাকেন। তিনজনই মিশুক, একজনের হাতে ট্যাটু রয়েছে আর একজন খুবই শান্ত। মূলত তাদের গ্রাম ভ্যালীর পাশে হওয়ার কারনে নেটওয়ার্ক নেই। তারা মূলত দু’ঘন্টা হেঁটে পাহাড় বেয়ে বড় সেই পাহাড়ের উপরে একটি আম গাছের উপরে মোবাইল দিয়ে গেম খেলেন।সারা রাত আম গাছের উপরে নাকি থাকবে আজ তারা,ভাবা যায়!

যাহোক,একটু এগিয়ে একটি গুহা দেখতে পেলাম,আমার খুব শখ হলো গুহাটির ভিতরটা দেখার জন্য,শান্ত ছেলেটি আমাকে গুহার ভেতরে যেতে সাহায্য করলেন,এবং বলতে লাগলেন এখানে নাকি প্রায় রাতে আগে হরিণ আসত,নোনা গুলো খাওয়ার জন্য।এখন এলাকায় হরিন কম হয়েছে, বিদায় আসে না আর। গুহাটি বেশি লম্বা না, তাই বের হয়ে আসলাম।আবার ছড়া ধরে হেটে পৌঁছে গেলাম জুমের একটি কিনারায়, ঠিক এ জুম ধরেই পাহাড়টি বাইতে হবে। তখন ঘড়ির কাটা ৫ টা আমরা একটি জুম ঘরে জুমিয়া পরিবারের বাড়িতে উঠলাম,সেখান থেকে পাহাড় আরও বিশ পনের মিনিটের পথ ছিল, আমরা সব সেই পাহাড়ে সন্ধ্যা না হওয়ার আগেই পৌঁছালাম। পাহাড়ের উপর একটি বিশাল আম গাছ, সে পাশে ছোট্ট একটি মাচাং বাড়ি ও পাশে খোলা জায়গায় দুটি ঘর। এ ঘর গুলো পাশাপাশি বিদায় উঠলাম,এবং সবার সাথে পরিচয় হলাম।বাড়িতে এক বৃদ্ধা ও তার পুত্র বধু নাতি রয়েছে শুধু, তাদের ছেলে কাজের জন্য কয়েকদিন হল রাঙামাটি শহরে গেছেন। যাহোক আমরা সকাল থেকে হাটছি, সর্বমোট ২৭ কিলোমিটারের পথ আজ পাড়ি দিয়েছি।তাই সবাই ক্লান্ত ও সবাই দূর্বল,সেজন্য বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। একটু পরে বৃষ্টিও শুরু হল সন্ধ্যা নেমে এল দূর পাহাড়ি গ্রামটিতে,কিন্তু দূরে কি দেখা যাচ্ছে? ও একদল যুবক টর্চ লাইট জ্বালিয়ে আমরা যে বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি সে বাড়িতে আসতে শুরু করলেন।প্রথমে পাঁচজন পরে মোট দশজন যুবক ও মধ্য বয়সি মানুষ আসলেন। প্রথমে সবাই চুপ ছিল পরে আসতে আসতে তারা কথা বলতে বলতে বুঝতে পারলাম তারা আমাদের জন্যই এসেছেন। রাজনৈতিক দলের কর্মীগুলোর কথাবার্তা গুলো আরও বাকা হতে লাগল সঙ্গে ঝড়ও বারি করে দিতে লাগল।